ট্রান্সফিউশন শেষে স্যালাইন শুরু—সময় কেন গুরুত্বপূর্ণ

আমরা যেসকল রোগীর ট্রান্সফিউশন দিই তাদের অনেকেই স্যালাইন পায় নানা কারনে। যদি Severe Hypovolemia থাকে তাহলে স্যালাইন দেওয়ার হিসাব নিয়ে কিছু করার থাকেনা। কিন্তু রোগী এমন অবস্থায় নেই, কিন্তু অন্য কারনে স্যালাইন পাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে কি করা উচিত? ট্রান্সফিউশন শেষ হওয়ার পরপরই স্যালাইন শুরু করা দেওয়া যায়?
ব্লাড ব্যাগের ভিতরে থাকে Anti-coagulant। সেটি ব্যবহার করা হয় রক্ত যাতে ব্যাগের ভিতরে জমাট না বাঁধে, সেল গুলো যাতে বেঁচে থাকে এসব কারনে। যখন ব্যাগ থেকে রক্ত শরির প্রবেশ করে তখন প্রথমেই সেল গুলো Rehydrate হওয়ার প্রয়োজন হয় যাতে স্বাভাবিক biconcave shape এ আসতে পারে। এটি নাহলে microcirculation (বিশেষ করে spleen এবং liver) এর মাঝ দিয়ে যাওয়ার সময় এটি নষ্ট হয়ে যাবে। এটি সম্পন্ন হতে সাধারনত ৩০-৬০ মিনিট সময় লাগে। তাই আমরা ট্রান্সফিউশিন শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টা আগে রক্তের প্রকৃত অবস্থা জানতে পারিনা।
এখন আমরা যদি whole blood দিই রোগীকে তবে তাতে প্রায় ৫০০ মিলি থাকে (RBCs + plasma)। শরিরে প্রথমেই এই প্লাজমাকে absorb করে ফেলতে পারেনা, অতিরিক্ত প্লাজমা interstitial spaces এর দিকে চলে যায় ১-২ ঘণ্টার মাঝে Capillary leakage, Lymphatic drainage এর মাধ্যমে।
সাধারন অবস্থায় সুস্থ কিডনি 0.5–1 mL/kg/hr excess fluid শরির থেকে বের করতে পারে। যদি একজন ৭০ কেজি ওজনের একজন রোগীর প্রতি ঘণ্টায় ৩৫-৭০ মিলি অতিরিক্ত ফ্লুয়িড শরির থেকে বের করতে পারে তবে ব্লাড ব্যাগে যদি ৩০০ মিলি প্লাজমা থাকে তবে সেটি,
প্রথম ১ ঘণ্টায় ৫০ মিলি শরির থেকে ফ্লুয়িড বের করার পর অবশিষ্ট থাকে ২৫০ মিলি যেটি রক্তের সাথেই মিশে থাকে।
দ্বিতীয় ঘণ্টায় আরও ১০০ মিলি বের হলে অবশিষ্ট থাকে ২০০ মিলি।
কিডনির মাধ্যমে অতিরিক্ত ফ্লুয়িড যেভাবে এডজাস্ট হয় তারচেয়ে দ্রুত হয় Capillary leak এবং lymphatic drainage এর মাধ্যমে (বিশেষ করে hypoxic/inflamed tissues তে).
এই দুই প্রক্রিয়ার সম্মিলিত প্রচেস্টায় ট্রান্সফিউশন দেওয়ার ২ ঘণ্টা পর, ১০০ মিলি ফ্লুয়িড বের হয় কিডনি দ্বারা, আর ১৫০-২০০ মিলি tissues চলে যায়। তাই ২ ঘণ্টা পরেই আমরা রক্তের হিমোগ্লোবিনের প্রকৃত চিত্র পাই।
এখন এই সময়ের মাঝেই যদি আমরা স্যালাইন শুরু করে দিই তাহলে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়াটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অতিরিক্ত ফ্লুয়িডের জন্য hemodilution হওয়ার সুযোগ তৈরি হয় ফলে full oxygen-delivery দেওয়াটাও কঠিন হয়ে যায়। এতে দেখা যায় ট্রান্সফিউশন দেওয়ার পরও রোগী Hypoxic থাকছে এবং রক্তের প্রকৃত চিত্র না পাওয়াতে অতিরিক্ত ট্রান্সফিউশনের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। এই অবস্থা আরও জটিল হয় যদি কোনও কারনে পূর্ব থেকেই শরিরে ফ্লুয়িড বেশি থাকে অথবা ফ্লুয়িড বের হওয়ার প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকেনা।
ট্রান্সফিউশনের প্রকৃত উপকার পেতে হলে ট্রান্সফিউশন শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পর স্যালাইন শুরু করা যায় যদি প্রয়োজন হয়। এর পূর্বে ব্যবহার শুধুই Sever hypovolemia/Volume loss এর ক্ষেত্রে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *